এ ঘটনায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাংবাদিকদের তোপের মুখে চেম্বার বন্ধ করতে বাধ্য হন তিনি। পরে শনিবার উপজেলা প্রশাসন নোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করে বন্ধ করে দেয়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম শিপন জানান, শুক্রবার সকালে তার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাৎক্ষণিক জেলা সিভিল সার্জন তাকে ফোন করে বিষয়টি অবিহিত করেন এবং তাকে আইসলোশেনে যেতে বলেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি কোনো গুরত্ব না দিয়ে প্রতিদিনের মতো বিকাল ৪টা থেকে পটুয়াখালী ব্যামাগার মোড়ে অবস্থিত তার মালিকানাধীন নোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখা শুরু করেন। এ খবর সাধারণ রোগীরা জানতে পেরে অন্য ডাক্তার দেখানোর জন্য যেতে চাইলে তাদের বাধা প্রদান করেন তার সহকর্মীরা।
পরে রোগীর স্বজনরা সাংবাদিকদের বিষয়টি জানালে রাত সাড়ে ৮টায় সাংবাদিকরা তার চেম্বারে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সংবাদ করতে বলেন। তার কারণে যদি কোনো রোগীর ক্ষতি হয় তাহলে তিনি তার দায় দায়িত্ব নিবেন বলে দাবি করেন।
বিষয়টা অনৈতিক এবং আইনের লংঘন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে অভিযুক্ত ডাক্তার সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে স্থানীয় জনগণ ও শতাধিক রোগীর স্বজনদের তোপের মুখে চেম্বার ছাড়তে বাধ্য হন মাহমুদুর রহমান।
যারা বিকেল থেকে চেম্বারে গিয়ে তার সংস্পর্শে এসেছেন এমন একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, তারা এখন করোনা আতকেংর মধ্যে রয়েছেন। যে ডাক্তার নিজে করোনা আক্রান্ত সে কীভাবে শুধুমাত্র টাকার লোভে রোগীদের এমন বিপদে ফেলতে পারে। তারা ডাক্তার মাহমুদের শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা কমিউনিস্ট পার্টি সভাপতি ও সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য মো. মোতালেব মোল্লা জানান, একজন সচেতন মানুষ হয়ে এটি তার করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। একটি মেডিকেল কলেজের একজন সাবেক অধ্যক্ষ হয়ে তিনি এ কাজ করতে পারেন না। তার বিরদ্ধে সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম (শিপন) জানান, করোনা রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার পর তিনি নিজে তাকে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেছেন এবং আইসোলেশনে থাকতে বলেছেন। কিন্তু তিনি তা না করে যা করেছেন তাতে সকল ডাক্তার মহলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং নোভা ডায়গনস্টিক সেন্টারটি অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে,পটুয়াখালীতে ৪ জুলাই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২২ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৯৩ জন।